আপন ভাগ্নিকে দিনের পর দিন ধর্ষণ ও গর্ভপাত করেন মামাঃ ২ মামা গ্রেপ্তার

দিন দিন সবকিছু বদলে যাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে মানুষের নিরাপদ আশ্রয় গুলোও। প্রতি দিনই খুন, রাহাজানি, ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। এসবের ভয়ে মা বাবারা মেয়েকে ঘরের বাইরে দিতে চায় না। কিন্তু ঘরের ভিতরে মেয়েরা কতটা নিরাপদ!!
ইলিশের দেশ খ্যাত চাঁদপুরে আপন ভাগ্নিকে ধর্ষণ ও গর্ভপাতের ঘটনা ঘটেছে। পরে দুই মামাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (RAB)। গ্রেফতার হওয়া ২ জন হলেন চাঁদপুরের কচুয়া থানার শিপন হোসেন ও মফিজুল হোসেন।
গত বুধবার ৬ অক্টোবর ২০২১ গভীর রাতে কুমিল্লার লাকসাম থানা এলাকা থেকে তাদের দুই ভাইকে আটক করে র্যাব।
র্যাব-১১ জানায়, মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. শিপন হোসেন গত বছরের অক্টোবর মাস হতে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তার ১২ বছর বয়সী ভাগ্নিকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে যায়।
কিশোরীর মা মেয়ের শারিরীক পরিবর্তন দেখে বিষয়টি প্রথম এ বুঝতে পারে। পরে কিশোরীর মা তার ভাই মো. মফিজুল হোসেনকে জানালে সে বিষয়টি কারও কাছে প্রকাশ করতে নিষেধ করে।
কাউকে জানালে মা ও মেয়ের পরিবারকে সমাজ থেকে বিতাড়িত করে দেবে বলে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
এরই মধ্যে মফিজুল ভিকটিমের পরিবারকে লাকসামে একটি ভাড়া বাড়িতে জোরপূর্বক রেখে আসেন।
সেখানে থাকা অবস্থায় ১২ বছরের ভাগ্নিকে গর্ভপাত করানোর জন্য জোরপূর্বক ওষুধ সেবন করানো হয়। ওষুধ সেবনের ফলে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায় তাই গত ২৪ মে ভাগ্নিকে হাসপাতালে নেয়ার পথে একটি মৃত সন্তান প্রসব করে।
এরপর কোনো ধর্মীয় বিধান অনুসরণ না করেই দ্রুত মফিজুল নিকটস্থ কবর স্বানে শিশুটিকে দাফন করেন।
পরবর্তীতে মফিজুল বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য ভিকটিমের পরিবার ও ভিকটিমকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখান।
অকালে গর্ভপাতের কারণে ভিকটিম অসুস্থ হয়ে যায়। মেয়েটির মা মফিজুলকে বিষয়টি জানায় এবং অসুস্থ কিশোরীকে চিকিৎসা করানোর জন্য সাহায্য চায়। কিন্ত মামা মফিজুল তাদেরকে অপমান করে বের করে দেন।
মফিজুল কিশোরীর মাকে কোনো সাহায্য না করে তাদেরকে লাকসামের ভাড়া বাড়ি থেকে তাড়িয়ে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বিষয়টি কারও কাছে না বলার জন্য বারবার হুমকি দেয়। আর ধর্ষক মো. শিপন হোসেনকে আত্মগোপনে রাখে।
মেয়েটির মা নিরুপায় হয়ে এক সপ্তাহ আগে মোবাইল ফোনে বিষয়টি র্যাবকে ঘটনাটি জানায়। তারই প্রেক্ষিতে র্যাব-১১, বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করতে থাকে। তদন্তে র্যাব ঘটনার সত্যতা খুঁজে পায়।
পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-১১, এর একটি দল বুধবার ৬ অক্টোবর ২০২১ গভীর রাতে কুমিল্লা জেলার শাহরাস্তি থানার দিঘীরপাড় এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে ধর্ষক মো. শিপন হোসেন (২০) ও তার বড় ভাই মো. মফিজুল ইসলামকে (৩৬) আটক করে। প্রাথমিক অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে দুই ভাই।
এ বিষয়ে আটক দুইজনের বিরুদ্ধে চাঁদপুর জেলার কচুয়াথানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ধর্ষণের মতো অপরাধের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১১-এর সাকিব হোসেন। দোষীদের শিগ্রই শাস্তির আওতায় আনা হইবে।