নামায না পড়লে ও দাড়ি কামালেই কঠিন শাস্তিঃ তালেবান

তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে একের পর এক নিয়মনীতি চালু করছেন। আফগানিস্তানকে ইসলামি পন্থায় পরিচালনা করার লক্ষ্যে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।
দেশে শরিয়াহ আইন চালু করেছেন, যেখানে পবিত্র কোরানের ভিত্তিতে আফগানিস্তান পরিচালিত হবে। এর আগে চুরি করলে হাত কাটা ও জেনা করলে মৃত্যুদন্ড ইত্যাদি আইন প্রবর্তন করেছেন।
এখন শরিয়াহ আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে দাড়ি বা নামায আদায় না করলে শাস্তির ব্যবস্থা করা। এরি মধ্যে এ আইন বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে দাড়ি কামানো এবং নামাজ না পড়ার অপরাধে আফগান বাসিন্দাদের পেটাচ্ছে তালেবান। এতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। তবে এ আইন বলবল থাকবে বলে জানিয়েছেন তালেবান প্রধান।
অনেকে বলছেন, তালেবান ইচ্ছে মতো আইন দমন-পীড়ন চালাচ্ছে সাধারণ আফগানদের উপর। আর তালেবানের দাবি, যে কোনো মূল্যে আফগানিস্তানে প্রতিষ্ঠা করা হবে শরিয়াহ আইন। ইসলামী আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই কারো।
কাবুলের প্রতিটি সড়কে রাত দিন ২৪ ঘণ্টাই থাকে তালেবানের সচল পাহারা। পথে ঘাটে অপরাধ করে পার পাওয়ার উপায় নেই কারও। তালেবান বলছে, অপরাধের সাথে জড়িয়েছে এমন কারও খোঁজ পেলেই আটক করা হচ্ছে তাকে। পাঠানো হচ্ছে কারাগারে। অপরাধ বিবেচনা করে ইসলামী আইনে দেওয়া হচ্ছে শাস্তি। এক প্রকার কমে গেছে আফগানিস্তানের অপরাধ প্রবনতা তালেবান সরকার আসার পর থেকে।
তালেবানের পক্ষে বিপক্ষে কথা বলছে মানুষ কেউ কেউ বলছে শুধু হত্যা, ছিনতাই, রাহাজানি নয়, দাড়ি কামানো বা নামাজ না পড়ার মতো অপরাধেও শাস্তি পেতে হচ্ছে আফগানদের। তারা বলছেন, ১৯৯০ সালের শাসন ব্যবস্থায় ফিরছে তালেবান। তালেবান তাদের ইচ্ছার বাস্তবায়ন করতে যে কিছু করতে পারে।
কেউ কেউ বলেন, দেশের ইতিহাসে সেরা শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করছে তালেবান। এখন আর কেউ অন্যায়ভাবে জুলুম নির্যাতন করার সাহস পায় না। তারা যুগ যুগ আফগান সরকার হয়ে থাক। ইসলাম প্রতিষ্ঠা একমাত্র তালেবানদের হাতেই সম্ভব।
তালেবান বলছে, দেশে শরিয়াহ আইন প্রতিষ্ঠার জন্যই বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধ করেছে তারা। সবাইকে ইসলামের আদর্শ মেনে চলার আহ্বানও জানানো হয়।
আফগানিস্তানের তালেবান বিচারক মোহাম্মাদ শায়ির বলেন, বহু ত্যাগ স্বীকার করে এই জায়গায় পৌঁছেছি। এখন সংগ্রাম করছি যেন শরিয়া আইন মেনে সব কিছু পরিচালনা করতে পারি। আগামী দিনগুলোতেও প্রতিষ্ঠা করতে চাই শরিয়া আইন। আমরা অত্যাচার করতে আসিনি আমরা এসেছি অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে।
সম্প্রতি দেশটির হেরাত প্রদেশে অপহরণে দায়ে চার জনকে হত্যার পর মরদেহ ক্রেনে ঝুলিয়ে রাখে তালেবান। এ ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়ে গোষ্ঠীটি। এতে হত্যার মত জুলুম করার সাহস আর কারো মধ্যে পয়দা হবে না ভবিষ্যতে।