একই দেহে দুই বোনের জীবনের গল্প, শুনলে আশ্চর্য হবেন আপনিও

আল্লাহর সৃষ্টি বড়ই বিচিত্র। এ পৃথিবীতে তিনি কত কিছু সৃষ্টি করেছেন তার মনের মাধুরি মিশিয়ে। সৃষ্টির সাথে সাথে এর আকার ও দিয়েছেন। আল্লাহ তালা মানুষকে বিভিন্ন আকৃতি দিয়েছেন, কাউকে লম্বা,কাউকে খাট,কাউকে সাদা,কাউকে আবার কালো। এভাবে সৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহ তালা তার ক্ষমতা ও ইচ্চা প্রকাশ করেছেন। তেমনি দুই বোন জার্মানিতে জন্ম গ্রহণ করেছেন যাদের একই দেহের মধ্যে জোড়া লাগানো। হাত-পা জোড়া লাগানো দুই বোন অ্যাবি গেইল আর ব্রিটনি। দুজন একই শরীরে যুক্ত থাকলেও তারা সম্পূর্ণ দুটো আলাদা মানুষ। এমনকি তাদের আলাদা চিন্তাভাবনা, নেশা, খাদ্যাভ্যাস। একই দেহে মাথা দুইটি।
১৯৯০ সালের ৭ মার্চ জার্মানির জন্ম গ্রহণ করেন। এই বোনের ছোট থেকে বড় হওয়া ছিল গল্পের মতো।
অ্যাবিগেইল আর ব্রিটনির মা প্যাটি হেনসেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর জানতেন পারেন তার শরীরে একটি ভ্রূণই বেড়ে উঠছে। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাকে যমজ সন্তান উপহার দেন।
দুটো শিশুই জোড়া লাগানো ছিল। শুধু বাইরে থেকে তাদের শুধু মাথা দুটো আলাদা। সাধারণত এ রকম সন্তান খুব বেশি দিন বাঁচতে পারে না।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, অস্ত্রোপচার করে তাদের আলাদা করে দেয়া হবে। সে ক্ষেত্রে যে কোনো একজনকে বাঁচানো সম্ভব হবে।
তবে মায়ের মন তাতে সায় দেয়নি। কারণ কোনো সন্তানকেই প্যাটি হারাতে চাননি। সে অপরেশন করতে নিষেধ করেন ডাক্তারকে।
তাই স্বামীর সঙ্গে মিনেসোটার প্রত্যন্ত ফার্মে দুই সন্তানকে বড় করতে থাকেন।
অ্যাবিগেইল এবং ব্রিটনি এর বয়স এখন ২৯ বছর। সমাজের সঙ্গে সংগ্রাম করে, নিজেদের সঙ্গে সংগ্রাম করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন তারা। তারা এখন শিক্ষকতা করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি রয়েছে দুজনের। অ্যাবি অঙ্ক এবং ব্রিটনি ইংরাজিতে স্নাতক। শুধু তাই নয়, দুজনেরই আলাদা ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে। এই মুহূর্তে দু’জনেই স্কুলের শিক্ষক। শারিরীক প্রতিবন্ধকতা তাদের দমিয়ে রাখতে পারে নি। একজক্ন ইংরেজি ও অরেক বোন অংক পড়ান।
দুজনের শরীর এক হলেও মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ আলাদা। তাই তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, চিন্তাভাবনাও আলাদা। এমনকি খাবারের প্রতি ভালবাসাও আলাদা। হৃৎপিণ্ড, পিত্তাশয় এবং পাকস্থলী আলাদা। তাই খিদেও আলাদা আলাদা সময়ে পায়।
বাকি সমস্ত কিছুই এক। যেমন অন্ত্র একটাই, একটাই লিভার, দুটো কিডনি-ডিম্বাশয়। আর তিনটে ফুসফুস রয়েছে তাদের। ফলে বেশিরভাগ জৈবিক ক্রিয়াগুলো তাদের একই সঙ্গে ঘটে।
আরও বিস্ময়ের বিষয় হল, একজনের জ্বর হলেই যে অন্যজনের জ্বর হবে তা কিন্তু নয়। দু’জনের শরীর এক হলেও অসুখ-বিসুখ বেশির ভাগ সময়ই একসঙ্গে হয় না!