চানাচুরের সাথে কাচকি মাছ মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে চানাচুরের নতুন ফ্লেভার

ইলিশের স্যূপ, নুডুলস, পাংগাসের আচার, মাছের পিৎজার পর এবার দেশি প্রজাতির কাঁচকি মাছের চানাচুর তৈরি করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের একদল গবেষক। যেসব বাচ্চারা ছোট মাছ খেতে চান না তাদের বিকল্প উপায়ে মাছের পুষ্টি গ্রহণের উপায় উদ্ভাবন করেছেন কাঁচকি মাছ প্রক্রিয়া। শুধু তাই নয়, কাঁচকি মাছের চানাচুর, কুড়কুড়ে বাদাম ও তিলের বারও তৈরি করেছেন গবেষকরা। চানাচুর বাচ্চাদের খুব পছন্দ তাই তারা যাতে চানাচুর খাওয়ার ছলে কাচকি মাছের পুস্টি গ্রহন করতে পারে।
রবিবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গবেষক দলের প্রধান ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ নুরুল হায়দার। গবেষণায় সহযোগী গবেষক ছিলেন প্রভাষক মো. মোবারক হোসেন।
ড. নুরুল হায়দার বলেন, কাঁচকি দেশি প্রজাতির খুব ছোট এবং প্রায় স্বচ্ছ একটি মাছ। মাছটি দেশের নদ-নদী, খাল-বিলে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। কিন্তু মাছের আকার ছোট এবং কাঁটাযুক্ত হওয়ায় অনেকেই এটি খেতে পছন্দ করেন না। বিশেষ করে ছোট বাচ্চারা খেতে চায় না। কিন্তু এই ছোট মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যা তাদের ঘাটতি থেকে যায়। যারা ছোট মাছ খেতে চায় না বিকল্প উপায়ে তাদের সেই পুষ্টি গ্রহণের উপায় হিসেবে তৈরি করা হয়েছে এ চানাচুর এবং বার। দেশিয় প্রজাতির ছোট মাছ থেকে মূল্য সংযোজিত তৈরিকৃত খাদ্য উৎপাদনে গবেষণায় কাঁচকি মাছকে নির্বাচন করি। কাঁচকি মাছে শরীরের জন্যে প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও ভিটামিন ‘এ’ বিদ্যমান। বর্তমানে এ মাছটির প্রচুর পরিমাণে আহরিত হচ্ছে।
হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাঁচকি মাছ গুরুত্বপূর্ণ। এ পুষ্টিসমৃদ্ধ মাছ খেতে শিশুসহ অনেকেই অনাগ্রহী। মাছের এ প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেল সহজে তারা যেন পেয়ে যায় সেজন্যে দুটি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে ছয়টি পণ্য উৎপাদন করেছি। শিশুসহ সকল বয়সের মানুষের চানাচুর এবং বার জাতীয় খাবারটি খুব পছন্দনীয়। তাই ক্যাটাগরি-১ এর পণ্যগুলো মূলত চানাচুর জাতীয়, অন্যদিকে ক্যাটাগরি-২ এর পণ্যগুলো মূলত কুড়কুড়ে বাদাম ও তিলের বার জাতীয় (যা স্থানীয়ভাবে তিল বাদাম তক্তি হিসেবে পরিচিত) করে তৈরি করা হয়েছে। এতে তারা এসব মুখরোচক খাবারে সাথে মাছের পুষ্টিও গ্রহণ করতে পারবে।
মো. মোবারক হোসেন বলেন, মুখরোচক খাবারে প্রয়োজনীয় পুষ্টিমান বৃদ্ধিও লক্ষেই আমরা মূলত গবেষণাটি প্রকল্প সম্পন্ন করেছি। ছোট মাছের কাটা খেতে হবে চিবিয়ে এতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম পাওয়া যাবে। অন্যদিকে গর্ভবতী মা এবং দুগ্ধদানকারী মায়ের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দিয়ে থাকে এ কাঁচকি মাছ।