পাখির বাসা দিয়ে তৈরী স্যুপ, এক বাটি স্যুপের দাম ৯০ হাজার টাকা

এক বাটি স্যুপের দাম বাংলাদেশী টাকার ৮৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। যাতে নেই কোনো স্বাদ তারপরেও কেন এতো দাম এই স্যুপের? কি আছে এতে?পাখির বাসা থেকে তৈরি করা হয় এই স্যুপ। কিন্তু কি কারণে এই স্যুপের দাম এতো বেশি? আর কিভাবেই বা তৈরি করা হয় পাখির বাসার এই স্যুপ?
দক্ষিণ -পূর্ব এশিয়ার একটি ছোট্ট পাখি সুইপ্লেট।এই পাখিরা সাধারণত পাহাড়ের গুহায় তাদের বাসা বাদে।এই পাখির বাসা আমাদের পরিচিত অন্যান্য পাখির বাসার থেকে অনেক আলাদা।এই পাখি তাদের মুখের আঠালো লালা দিয়ে দেয়ালে বাসা তৈরি করে।স্থানীয়দের বিশ্বাস এই পাখির বাসায় রয়েছে ঔষুধি গুন।এগুলো শরীরকে পুষ্ট করতে রোগ নিরাময়ে এবং দীর্ঘায়ু করে আনতে সহায়তা করে।তাই কোনো স্বাদ না থাকার পরেও হাজার বছরের বেশি সময় ধরে চীন,ভিয়েতনাম, মালোয়েশিয়ার মানুষেরা খেয়ে আসছে এই পাখির বাসা।
সুইপ্লেট পাখি বছরে তিনবার বাসা বাধে।এই বাসা প্রাপ্তির সবচেয়ে সাধারণ উপায় সরাসরি গুহায় সংগ্রহ করা। কিন্তু সেটা সংগ্রহ করা বেশ কষ্টসাধ্য ও বিপদ রয়েছে। এই পাখি গুহার উপরের দিকে বাসা করে বিদায় তা খুঁজে পেতে এবং সংগ্রহ করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।উঁচু গুহা থেকে বাসা সংগ্রহ করতে নিতে হয় জীবনের ঝুঁকিও।
অন্যদিকে অতিরিক্ত চাহিদা থাকার কারণে ১৯৫৭-১৯৯৭ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ার এই পাখির সংখ্যা কমে যায় ৮৮ ভাগ।ফলে দাম বেড়ে যায় অনেক বেশি। বর্তমানে এই পাখির বাসা প্রতি কেজি দেড় লাখ থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকায় বিক্রি হয়।বিশাল এই ব্যবসার কথা বিবেচনা করে বর্তমানে আধুনিক উপায়ে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে এই বাসা।জনবসতির আসে পাশে এই পাখির বাসা তৈরির উপযোগী করে তৈরি করে দেওয়া হয় ঘর।সেই ঘরে পাখিদের আকৃষ্ট করার জন্য লাউড স্পিকারে বাজানো হয় আগে থেকে রেকর্ড করে রাখা সুইপ্লেট পাখির ডাক।এই ডাকে আকৃষ্ট হয়ে ঘরের ভেতর বাসা তৈরি করে পাখিরা। বছরে তিনবার সংগ্রহ করা হয় পাখির বাসা।
সংগ্রহ করা পাখির বাসা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় পরিস্কার করে বিক্রির উপযোগী করা হয়।পাখির বাসা দিয়ে খাবার তৈরি করার প্রক্রিয়া বেশ সহজ। শুধু পানিতে সিদ্ধ করেই স্যুপ হিসেবে খাওয়া যায় এটি।তবে এই স্যুপে নেই কোনো স্বাদ বা রঙ।তাই স্বাদ আনতে এতে মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য যুক্ত করা হয়। বর্তমানে অনেক দেশের নামি-দামি রেস্টুরেন্ট গুলোতেও পরিবেশন করা হয় এই স্যুপ।চাইলে আপনিও ট্রাই করতে পারেন।