শারীরিক প্রতিবন্ধী না হয়েও প্রতিবন্ধী ভাতা তোলেন এক ছাত্রলীগ কর্মী

শারীরিক কোনো সমস্যা নেই। অসচ্ছলও নন। শরীর পুরোপুরি ফিট। তবুও প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা খান লালমনিরহাটের এক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইদুল ইসলাম সরকার বাবু (৩১)। সম্প্রতি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া চালু করলে সবার সামনে আসে বিষয়টি। যেখানে দেখা যায় বাবুর নাম।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইদুল ইসলাম দিব্যি দামি মোটরসাইকেল নিয়ে চলাফেরা করেন, বেন্সন সিগারেট খান। সব সময় পরেন দামি পোশাক। এমন সুস্থ মানুষ কীভাবে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে ভাতা তোলেন সেটাই এখন সবার প্রশ্ন। তার মত একজন সচ্ছল মানুষ কিভাবে গরীবের হক মেরে খায়।
জানা যায়, মাইদুল ইসলাম সরকার বাবু আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের বসিনটারী গ্রামের নজরুল ইসলাম সরকারের ছেলে। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে মাইদুল ইসলাম বাবু মেজ। তিনি ২০১৫ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর করেন। ২০২০ সালে বিয়ে করেন এবং বর্তমানে এক কন্যা সন্তানের পিতা। রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসা-বানিজ্য করেন মাইদুল। সবশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন মাইদুল। ২০১৮ সালে আদিতমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ওই কমিটির দায়িত্ব পালন করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিবন্ধী না হয়েও সমাজসেবা কার্যালয় এ ছাত্রলীগ নেতাকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেয়। শুধু তাই নয়, এরপর মাইদুল ইসলাম প্রতিবন্ধী কোটায় সরকারি চাকরির চেষ্টাও করেন।
জানা গেছে, সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মাইদুল ইসলামের নামে ইস্যু করা বইয়ের নম্বর ৭৯৬। ওই বইয়ের বিপরীতে দুই দফায় মোট ১১ হাজার ২৫০ টাকা উত্তোলন করেছেন তিনি।
আদিতমারী সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয় ও সোনালী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর মাইদুলের অ্যাকাউন্টে ৯ হাজার টাকা অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা হিসেবে জমা হয়। এই টাকা তিনি ওই বছরের ২০ অক্টোবর ২০২০ উত্তোলন করেন। এরপর দ্বিতীয় দফায় গত ১৫ মার্চ একই খাত থেকে ভাতা হিসেবে আরও ২ হাজার ২৫০ টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসেবে জমা হয়। এই টাকা তিনি উত্তোলন করেন গত ২৩ মার্চ।
আদিতমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইদুল ইসলাম সরকার বাবু মোবাইল ফোনে বলেন, ‘২০১৮ সালে আদিতমারীতে আমার ওপর প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা করে। এতে আমি গুরুতর আহত হই। আমার ডান হাতের একটা আঙুলে বিকলঙ্গতা দেখা দেয়। চিকিৎসকের প্রত্যয়নও আছে। তারপর থেকে আমি প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ জরিপ ফরম সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিই। পরে প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা উত্তোলন করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমি সম্পূর্ণ সুস্থ। প্রতিবন্ধী ভাতার সমুদয় টাকা ফেরত দিতে চাই। এ বিষয়টি আমি আদিতমারী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রওশন আলী মণ্ডলকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি।’ খুব শ্রীগ্র ই আমি উত্তোলনকারী টাকা সরকারী কোষাগারে ফেরত দিবো। সাময়িক অসুবিধার জন্যে আমি এ সাহায্য গ্রহন করেছি