পদ্মাপাড়ের বড় আতঙ্কের নাম রাসেল ভাইপার

বিষধর সাপগুলোর অন্যতম একটি হলো রাসেল ভাইপার সাপ। বিপন্ন তালিকায় থাকা এই সাপটির দেখা মিলছে পদ্মা নদীর তীরবর্তী ভাঙ্গা, ফরিদপুর, শরিয়াদপুর জেলার চরগুলোতে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারত ও মিয়ানমার থেকে পদ্মা নদীতে ভেসে বাংলাদেশে ঢুকেছে এই মহা আতঙ্ক রাসেল ভাইপার।
মূলত রাসেল ভাইপারের বাস চরাঞ্চলে ও তীরবর্তী অঞ্চলে। কিন্তু চর ডুবে যাওয়ায় রাসেল ভাইপার আশ্রয় নিয়েছে পাড়ে। খাবারের খোঁজে অনেক সময় চলে আসছে লোকালয়ে ও বসতবাড়ির আশপাশে।
বিষধর এই সাপের সঙ্গে সাক্ষাত হচ্ছে মানুষের। এতে আতঙ্কিত হয়ে পরেছে পদ্মাপাড়ের মানুষ। গত কয়েকদিনে অন্তত ১০০ মত রাসেল ভাইপার পিটিয়ে মেরেছেন তারা।
জানা গেছে, বিশ্বের ০৫ নম্বর ভয়ংকর বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার। শুধু তাই নয়, কামড়ের ক্ষিপ্রগতির দিক দিয়ে সব সাপকে হারিয়ে প্রথম স্থানে রাসেল ভাইপার। এ ছাড়া বিশ্বে দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ বিষদাঁত হলো রাসেল ভাইপারের। এই সাপের বিষ ‘হেমোটক্সিন’ Hemotoxin তথাকায় মাংস পঁচে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু বরন করে।
পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাসেল ভাইপার আতঙ্কে অনেকেই নিজেদের প্রয়োজনীয় কাজে যেতে পারছেন না। এমনকি জেলেদের জালেও প্রতিনিয়ত ধরা পড়ছে রাসেল ভাইপার। কিছু জেলেকে কামরানোর ঘটনাও ঘটেছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) জেনেটিক বিভাগের অধ্যাপক আবু রেজা বলেন, বিষধর প্রজাতির সাপগুলো সাধারণত চরের বালুতে বসবাস করে। এখন বর্ষার সময় চরগুলো ডুবে গেছে। তাই বন্যার পানিতে ভেসে নদীর তীরবর্তী পাড়ে আশ্রয় নিচ্ছে। এই মুহূর্তে পদ্মাপাড়ে বসবাসরত জনগনের সাবধানে থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সাপ গবেষক ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের শিক্ষক বোরহান বিশ্বাস বলেন, গত চার দিনে ১৬০টি সাপ মারার ঘটনা শুনেছি। এর মধ্যে ১০৫টি হচ্ছে রাসেল ভাইপার সাপ। বাকিগুলো ক্রেইট ও কোবরা জাতের সাপ।
সাপ নিধন বা না মেরে নিজেদের সাবধানে থাকার আহ্বান জানান এই গবেষক। তিনি বলেন, পদ্মার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে সাপগুলো আবার তাদের নিজেদের পছন্দের জায়গায় ফিরে যাবে। শুধু এই বর্ষার মৌসুমটা একটু সতর্কতা অবলম্বন করলেই সকলে নিরাপদ থাকতে পারবে ইনশাআল্লাহ।