জোড়া মাথার মনি-মুক্তা ১৩ বছরে পা দিলো

দিনাজপুরে জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে বেড়ে ওঠা মনি-মুক্তা এখন ১৩ বছরে পা দিয়েছে। তারা দুজনে স্থানীয় ঝাড়-বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করেন।
জোড়া মাথা থেকে আলাদা হওয়া সেই মনি-মুক্তা এখন ভালো আছে। রোববার ২২ আগস্ট ২০২১ নিজ বাড়িতে মনি-মুক্তার ১৩তম জন্মদিন পালন করা হয়।
২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালে ডা. এ আর খানের সফল অপারেশনের মাধ্যমে মনি-মুক্তার জোড়া মাথা আলাদা করা হয়েছিল। বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবায় ইতিহাসে এক বিরল দৃস্টান্ত সৃষ্টি করেছেন।
প্রতি বছর বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মনি-মুক্তার বন্ধুবান্ধবসহ প্রতিবেশী এবং গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে কেক কেটে জন্মবার্ষিকী পালন করা হলেও এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে ঘরোয়া পরিবেশে জন্মদিন পালন করা হচ্ছে বলে জানান মনি-মুক্তার বাবা জয় প্রকাশ পাল।
তিনি জানান, মনি মুক্তা সুস্থ এবং ভালো আছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে নাচ শিখছে। উপজেলা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে তারা। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে খেলা করে সময় কাটে তাদের।
জন্মদিনে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে মনি-মুক্তার বাবা।মনি-মুক্তা চিকিৎসক হতে চান এবং মানুষের সেবা করতে চান। মনি,মুক্তা বলেন দেশবাসীর দোয়া এবং সহযোগিতা পেলে আমরা অবশ্যই আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো।
দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের শরৎ চন্দ্র পালের ছেলে জয় প্রকাশ পাল।
স্ত্রী কৃষ্ণা রাণী পালের গর্ভে ২০০৯ সালের ২২শে আগস্ট পার্বতীপুর ল্যাম্ব হাসপাতালে সিজারিয়ান অস্ত্র পাচারের মাধ্যমে মনি এবং মুক্তা জোড়া লাগা অবস্থায় জন্ম নেয় ২০০৯ সালে।
পরে রংপুরের চিকিৎসকগণ ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে যমজ বোনকে অস্ত্র পাচারের মাধ্যমে পৃথক করার পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শ ক্রমে ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালে মনি-মুক্তাকে ভর্তি করা হয়।
৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এ আর খানের সফল অপারেশনের মাধ্যমে মনি-মুক্তা আলাদা হয়। বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবায় সৃষ্টি হয় এক নতুন ইতিহাস।
মনি মুক্তার বাবা মা দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন, যাতে তারা সুস্থ ভাবে বেরে উঠতে পারে। প্রকাশিত ক্যাপিটাল পোস্ট-২৫/৮/২০২১